• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:২৪ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ Отзыв о Pinup Wager в мае 2024 года Where To Find Iranian Wives অভয়নগরে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি অভয়নগরে ছাত্র ছাত্রী প্রদর্শনী ক্লাস সবক ও পাগড়ি প্রদান Plinko 2024: Guía para juegos Plinko gratuitos Vietnamese Vs. Thai Mail Order Brides: A Comparative Analysis যশোরের বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার ২ জন পলাতক আসামীকে ঢাকা ভাটারা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬, যশোর ও র‌্যাব-১ গোপালগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজ’কে পটুয়াখালী হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৬ Mostbet App Download For Android Apk And Ios 2023 Mostbet 314 Casino Azərbaycanda Bukmeker Kontoru Mostbet Azerbaycan Yukle Android Os Apk Və Ios App-d Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan ən Yüksək Bukmeyker Rəsmi Sa 0898520760 ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর

লাগাম ছাড়া নিত্যপণ্যের বাজার এখন খেয়ে পরে বাঁচাটাই মুশকিল

দেশে কোনও ভোগ্যপণ্যেরই সংকট নাই। রমজান উপলক্ষে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে সেসব পণ্যের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। কাজেই সংকট সৃষ্টির গুজবে কান দেবেন না।

টিপু মুনশি, বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : লাগাম ছাড়া চলছে নিত্যপণ্যের বাজার। দামের আগুনে কেউ হিসাব মেলাচ্ছেন কম কেনার তত্ত্বে। কেউ বা ধার করে মেটাচ্ছেন সংসার খরচ। এর মধ্যে আবার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে। এদিকে তেলের দাম বেশি ও সরবরাহ সংকটের দায় ডিলার ও মিলারদের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা।
‘আমরা যখনই বাজারে পণ্য কিনতে আসি, প্রত্যেকটি পণ্যেরই দাম বেশি। শুধু একটু খেয়ে পরেই বাঁচতে চাই। কিন্তু এখন এ খেয়ে পরে বাঁচাটাই মুশকিল।’
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির পাল্লার সঙ্গে আয়ের হিসাব মেলাতে না পেরে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা জানালেন একজন ভোক্তা। তার মতোই বাজারে এসে হিসাব মেলাতে পারছেন না মধ্য ও নি¤œমধ্যবিত্তের কেউই। সেই সঙ্গে দাম বৃদ্ধির বাজারে কেউ চলছেন পরিমাণে কম কেনার তত্ত্বে ভর করে।
বাজারে আসা ক্রেতারা নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, এখন যে পরিস্থিতি। খুব কঠিন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি। প্রতিদিন যেভাবে লাগামহীনভাবে আমাদের দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, এর জন্য আমাদের প্রচ- সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ভোক্তার যখন নাভিশ্বাস, তখন জানা গেল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার বাজারে চলছে বোতলজাত ভোজ্যতেলের তীব্র সংকট। খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশ দামে। তবে বেশি দামে বিক্রির দায় এড়াতে খুচরা বিক্রেতা ও পাইকাররা সংরক্ষণ করছেন বিক্রয় রশিদ।
বিক্রেতারা বলেন, নগদ টাকায় যেখানে আমরা ২ থেকে ৩ টাকা কমে পণ্য পাচ্ছি সেখান থেকে পণ্য কিনছি, যেন কম মূল্যে বিক্রি করতে পারি। ভোক্তারা যখন দেখলেন যে তেলের দাম বাড়বে, তখন তাদের চাহিদা আরও বেড়ে গেছে।
বাজারে ভোজ্যতেলের চলমান সংকট কাটাতে ডিলার ও মিল পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ খুচরা বিক্রেতাদের। এদিকে বাজারে এসে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারবেন না, তাই টিসিবির ট্রাক আসার আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে ভোক্তাদের।
তেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মরিচ-পেঁয়াজ ও চালের দাম : লালমনিরহাটে তেলের সাথে নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজ। কয়েক দিনের ব্যবধানে এ দুটি পণ্যের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। দাম বেড়েছে মুরগি ও চালেরও। সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও তেলের বাজারে যেন নেই কোনো সুখবর।
বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০-৬৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আদা ও রসুন আগের ৬০-৭০ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি খুচরা বাজারে ৩৫-৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ১৬৫-১৬৮ টাকা ও খোলা সয়াবিন গত সপ্তাহের মতোই ১৯৫-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত পাঁচ লিটার তেল আগের মতোই ৭৯৫-৮০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও তা সহজেই মিলছে না। সংকট দেখা দিয়েছে পাঁচ ও দুই লিটার বোতলের।
সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি ২-৩ টাকা বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণা চাল (মোটা) ৪৬-৪৮ টাকা, বিআর ২৯ চাল ৩ টাকা বেড়ে ৫৮ টাকা, বি২৮ আগের মতোই ৫৮-৬০ টাকা, মিনিকেট ৬৮ টাকা এবং নাজিরশাইল ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মাছের দামে তেমন একটা হেরফের নেই। প্রায়ই অপরিবর্তিত রয়েছে সব ধরনের মাছের দাম।
হাতীবান্ধা বাজারের ব্যবসায়ী মহির উদ্দিন বলেন, আগে পাইকারি বাজার থেকে যত সহজেই পাঁচ ও দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যেত, এখন তা মিলছে না। অনেক কষ্টে এক-দুই বোতল মিলছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি ৫-১০ টাকা বেড়ে ১৬৫-১৭০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৪০-৪৫০ টাকা এবং পাকিস্তানি লেয়ার ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৬০০-৬২০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।
খোলা চিনি ৮৫ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা, মসুর ডাল মাঝারি ১০০ টাকা, চিকন ১২০ টাকা, আটা প্যাকেট ৪২ টাকা ও খোলা ৩৫ টাকা এবং ময়দা ৫৭-৬০ টাকা প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব ধরনের সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খুচরা পর্যায়ে কেজি প্রতি টমেটো আগের দামেই ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ২৫ টাকা, মটরশুঁটি ১০ টাকা কমে ৬০ টাকা, করলা ১১০-১২০ টাকা, ধনিয়া ৪০ টাকা, চিকন বেগুন ৩০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, সিম ৩৫-৪০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০-১০০ টাকা, শুকনো মরিচ ৩৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ১১০-১২০ টাকা, পটল ১০০-১২০ টাকা, সজনে ১৮০-২০০ টাকা, মিষ্টি আলু ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপি ১০-১৫ টাকা, ফুলকপি ৩০-৩৫ টাকা, লাউ ৪০-৪৫ টাকা, প্রতি হালি কাঁচকলা ২০-২৫ টাকা, লেবু ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কার্ডিনাল আলুর দাম সামান্য বেড়েছে। এখন ১৪ টাকা থেকে বেড়ে ১৬ টাকা হয়েছে। শিল আলু আগের ২৫-২৬ টাকা দরেই পাওয়া যাচ্ছে।
তেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচ-পেঁয়াজের দাম : রংপুরের বাজারে নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ। সপ্তাহের ব্যবধানে এ দুটি পণ্যের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। দাম বেড়েছে মুরগি ও চালেরও। সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও তেলের বাজারে কোনো সুখবর নেই।
মঙ্গলবার রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ১৬৫-১৬৮ টাকা ও খোলা সয়াবিন গত সপ্তাহের মতোই ১৯৫-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত পাঁচ লিটার তেল আগের মতোই ৭৯৫-৮০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও তা সহজেই মিলছে না। সংকট দেখা দিয়েছে পাঁচ ও দুই লিটার বোতলের।
মুলাটোল আমতলা বাজারের ব্যবসায়ী লিটু মিয়া বলেন, আগে পাইকারি বাজার থেকে যত সহজেই পাঁচ ও দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যেত, এখন তা মিলছে না। অনেক কষ্টে এক-দুই বোতল মিলছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি ৫-১০ টাকা বেড়ে ১৬৫-১৭০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৪০-৪৫০ টাকা এবং পাকিস্তানি লেয়ার ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস কিছুটা কমে ৬০০-৬২০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সিও বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, বাজারে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া গরু-খাসির দাম বেড়ে যাওয়ায় মুরগির ওপর চাপ পড়েছে। ফলে গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার ও পাকিস্তানি মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে।
পেঁয়াজের বাজারে কীসের আলামত?: নিত্যপণ্যের বাজারে চলছে টানা অস্থিরতা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অথচ এ সময়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনও কারণ নেই। তারপরও বেড়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধি কোথায় গিয়ে থামবে জানে না কেউই। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নিয়ে সন্দিহান ক্রেতারাও। বাজার ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এমন তথ্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহেও বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। বর্তমানে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তা বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীতের শেষভাগে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় পেঁয়াজের আশানুরূপ ফলন হয়নি। এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হয়েছে। এ ছাড়া সামনে রোজার মাস, মানুষের মধ্যে বেশি করে পেঁয়াজ কেনার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ী হিসেবে আমরা হতাশ। কারণ, জিনিসের দাম বাড়লে বা বাজারে অস্থিরতা হলে বেচাকেনা ভালো হয় না।
আরেক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে এখন দেশি যে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে তা মুড়ি কাটা পেঁয়াজ। এই পেঁয়াজের সরবরাহ এখন প্রায় শেষের পথে। ফলে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কম। তবে ফরিদপুর, মেহেরপুরের বড় সাইজের পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। ১০-১২দিনের মধ্যে হালি পেঁয়াজও বাজারে আসবে। তখন পেঁয়াজের দাম কমে যাবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতারা জানিয়েছেন, রোজার সময় দেশে পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু রোজা আসতে এখনও এক মাসের মতো বাকি। তারপরও কেন পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তা বোধগম্য নয়। সব পণ্যের দাম যখন বাড়ছে, সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে একশ্রেণির ক্রেতা রয়েছেন, নানা গুজবে কান দিয়ে রোজার জন্য এখনই পেঁয়াজ কিনে রাখছেন। তারা বুঝতে চাচ্ছেন না, এখন যে পেঁয়াজ বাজারে এসেছে তা কাঁচা। বেশি দিন রাখা যাবে না, পচে যাবে।
ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষি মোস্তফা হাওলাদার জানিয়েছেন, বাজারে যখন মুড়ি কাটা পেঁয়াজ ভরপুর ছিল, তখন দাম বেশ কম ছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে এসে মুড়ি কাটা পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এ সময়ে পেঁয়াজের দাম সব বছরই কিছুটা বাড়ে। এবারও তাই। এ কারণেই ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের পরে এসে এক দফা পেঁয়াজের দাম বেড়ে ৬০ টাকা কেজি হয়। অবশ্য তখন এক সপ্তাহের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম আবার কমে ৪৫ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু এ বছর তা হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন এবং আমদানি দুটোই বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস’র ২০১৭ ও ২০১৯ সালের তথ্যে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত পেঁয়াজের উৎপাদন ১৭-১৮ লাখ টনে মোটামুটি স্থিতিশীল থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা বেড়েছে। একই সঙ্গে সেই সময়ে উৎপাদনের বিপরীতে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে গত পাঁচ বছরে আমদানির পরিমাণও প্রায় আড়াইগুণ বেড়েছে। তবে গত ২-৩ বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে অবিশ্বাস্য পরিমাণে।
অপরদিকে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যচিত্রে বাংলাদেশে গত এক দশকে পেঁয়াজের আবাদি জমি, উৎপাদন ও ফলন (২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত) সবই প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাম্প্রতিক তথ্যমতে, ২০২১ সালে ২ দশমিক ৩৭ লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ মেট্রিক টন। যা উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে উন্নীত করেছে। কিন্তু এত উৎপাদনের পরও দেশে পেঁয়াজের সংকট এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি কৃষিবিদ, বিজ্ঞানী ও নীতিনির্ধারকদের জন্য যা সত্যিই দুশ্চিন্তার কারণ।
এভাবে উৎপাদন বাড়ার পরও পেঁয়াজ সংকটের মূলে রয়েছে আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদার ব্যাপক বৃদ্ধি। গত এক দশকে দ্বিগুণের বেশি উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি আমদানিও বেড়েছে প্রায় আটগুণ। এরপরও সরবরাহে সংকটের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধাই স্বাভাবিক বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও একটি মহল থেকে বলে বেড়ানো হচ্ছে, উৎপাদনের পাশাপাশি দেশে পেঁয়াজের চাহিদাও বেড়েছে ব্যাপক।
কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ ২০২০-এর তথ্যমতে, ২০২০ সালে পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ছিল ১৯ দশমিক ৫৪ লাখ টন। যেহেতু পেঁয়াজ একটি পচনশীল পণ্য তাই মোট উৎপাদনের শতকরা ১৭ থেকে ২৫ শতাংশ সংগ্রহোত্তর অপচয় হিসেবে ধরলে ব্যবহারের উপযোগী পেঁয়াজের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৬৫৫ লাখ টন। অন্যদিকে, মাথাপিছু পেঁয়াজের বর্তমান ব্যবহার ৩২ গ্রাম। এই হিসাবে নিট ভোগ্যপণ্য হিসেবে মোট চাহিদা দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৮৬ লাখ টন। তাছাড়া বীজ উৎপাদন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও ওষুধ শিল্পে ব্যবহার মিলিয়ে দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক মোট চাহিদা প্রায় ২২ লাখ টন।
জানা গেছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি করা হয় ৬ দশমিক ৪১ লাখ টন। ২০২১ সালে আমদানি করা হয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, দেশে কোনও ভোগ্যপণ্যেরই সংকট নাই। রমজান উপলক্ষে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে সেসব পণ্যের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। কাজেই সংকট সৃষ্টির গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিনে মজুত করে না রাখার জন্য ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.